English
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রকাশঃ ২০২৪-১১-০৭ ০৪:৪৬:০৯
আপডেটঃ ২০২৪-১১-২১ ০১:৫৫:২৭


নাসার চাঁদে অভিযান ও এক নোভোহা চিফের আত্ম-উপলব্ধি

নাসার চাঁদে অভিযান ও এক নোভোহা চিফের আত্ম-উপলব্ধি


বিজয় মজুমদার   

কলম্বাসে আমেরিকা আবিষ্কার করেননি। তিনি ইওরোপ থেকে আমেরিকা যাওয়ার এক সমুদ্র পথ খুঁজে বের করেন। যদিও এই নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছেকারণ কলম্বাসের আমেরিকা গমনের আগেও আমেরিকায় মানব বসতি ছিল।  তবে এই  অভিযানের আগে এশিয়াইউরোপ বা আফ্রিকার নাগরিক তথা পুরনো বিশ্বের কেউ আমেরিকা মহাদেশ-এর কথা জানতো না

ইতালির নাবিক কলম্বাস স্পেনের রাণী ইসাবেলার সহায়তায় তিনটি জাহাজ নিয়ে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর লিখিত ইতিহাসে প্রথম আমেরিকার উপকূল ক্যারিবীয় অঞ্চলে এসে হাজির হন। ইতিহাসে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বিশেষ করে উপনিবেশবাদের ইতিহাসে এটিকে যুগান্তকারী ঘটনা বলে অভিহিত করা যেতে পারে। কারণ এরপর ইওরোপের সকল শক্তি একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে আমেরিকাকে নিজেদের উপনিবেশ বানানোর জন্য  

কলম্বাস নিজেই নিশ্চিত ছিলেন না তিনি কোথায় এসে হাজির হয়েছেন। তিনি ভেবেছিলেন তিনি ভারতের কোনো এক উপকূলে এসে হাজির হয়েছেন। ফলে স্থানীয়দের তিনি ভারতীয় ভেবেছিলেন। তবে দেখতে কালো নয় বলে এদের তিনি রেড ইন্ডিয়ান নামে অভিহিত করেন। এটি ছিল কলম্বাসের দ্বিতীয় ভুল। যার কারণে এখনো আমেরিকার আদিবাসীদের রেড ইন্ডিয়ান নামে ডাকা হয়। 

কলম্বাসের এই আমেরিকা অভিযান বিশ্বে উপনিবেশবাদের যাত্রাকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছিল। কারণ কলম্বাসের মাধ্যম ইওরোপিয়ানরা নতুন কলোনি গড়ার জন্য খুঁজে পায় দুটি নতুন মহাদেশ উত্তর আমেরিকা দক্ষিণ আমেরিকা। আর এর অগ্রপথিক স্প্যানিশরাকারণ স্প্যানিশদের বিনিয়োগে এই উপনিবেশবাদের যাত্রা শুরু। এখানে তাঁরা  প্রথমে ঘাঁটি গাড়ে দক্ষিণ আমেরিকায়। তাদের পথ ধরে আসে পর্তুগিজরা

অন্যদিকে উত্তর আমেরিকায় এসে ঘাটি গাড়তে থাকে  ডাচসুইডিশফরাসিইংরেজ অন্যান্য ইউরোপিয়ান নাগরিকেরা। 

আমেরিকার আদিবাসীদের অনেকে নতুন এক চেহারার এই সকল সাদা নাগরিকদের দেবতা ভেবেছিলেন। যার ফলে তারা এদের আন্তরিকভাবে এদের নিজ ভূমিতে স্বাগত জানায়। কিন্তু ইওরোপিয়ানরা এসেছিলো লুটপাটের উদ্দেশ্যে। যার ফলে আদিবাসীদের তারা নির্বিচারে হত্যা করে তাঁদের সম্পদ লুট করে নিজ দেশে নিয়ে যায়। এমন কী আমেরিকার থেকে লুট করে আনা সম্পদের জাহাজ নিয়ে চলে ইউরোপিয়ানদের মধ্যে লুটপাট একই সাথে চলতে থাকে লুটপাট আদিবাসীদের ভূমি দখল করে সেখানে ইউরোপীয়দের বসতি স্থাপন। ইউরোপ থেকে আসা অভিবাসীরা অস্ত্রের জোরে একসময় আমেরিকা দখল করে নেয়আর নিজ দেশে আমেরিকার আদিবাসীরা হয়ে পড়ে সংখ্যালঘু

১৯৬৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার চাঁদে অভিযান জোরদার করে। এই উদ্দেশ্যে ১৯৬৬ সালে নাসা দেশটির টুবা সি্টির কাছে এমন একটা এলাকা গড়ে তোলে যেটাকে দেখতে অনেকটা চাঁদের ভূপৃষ্ঠের মতো লাগে। সেখানে চাঁদের পৃষ্ঠের মতো করে এলাকাটি সাজানো হয়। অ্যাস্ট্রোনটদের মত পোশাক পরে নভোচারীরা সেখানে এমন ভাবে ঘুরে বেড়াতো যেন চাদের মাটিতে নভোচারীরা হেঁটে বেড়াচ্ছে। স্থানীদের তখনো আসলে কেউ জানতো না যে এটা নাসার চাঁদে অভিযান পরিকল্পনার একটা অংশ

নাসার এই চন্দ্রাভিযান প্রকল্পের খানিকটা কাছেই ছিল নভোহা ইন্ডিয়ানদের এক বসতি। নভোহারা প্রথমে দূর থেকে নাসার এই কর্মকাণ্ড দেখত নভোচারীরা যখন ক্যাম্প থেকে বের হওয়া শুরু হলো তখন তাদের সাথে নোভোহা ইন্ডিয়ানদের খাতির হওয়া শুরু হলো

একদিন নাসার চন্দ্র অভিযানের অভিযাত্রীরা অ্যাস্ট্রোনট-এর পোশাক পরে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এমন সময় এক নোভোহা চিফ তার ছেলে এদের সামনে পড়ে যায়। নাসার অভিযাত্রীদের দেখে বিস্মিত নভোহা চিফ তার ছেলেকে জিজ্ঞেস করলো, তারা আসলে কারা?

ইংরেজি জানা সেই প্রকল্পে চাকরি করা চিফের ছেলের কাছে চিফ যে প্রশ্ন করছেন সেটা নভোচারীরা খেয়াল করলেন। তাঁরা নিজেরাও চিফের ছেলের কাছে জানতে চাইলে নভোহা চিফ কী জানতে চাইছে

চিফের ছেলে জানালেন চিফের আগ্রহ আসলে তাঁদের নিয়ে। তখন তাঁদের কর্মচারী চিফের ছেলের মাধ্যমে চিফকে অভিযাত্রীরা বললোআমরা এমন এক জাহাজ বানাচ্ছি যেটি দিয়ে আমরা চাঁদে যাবো! আমরা এখানে চাঁদে গিয়ে কী ভাবে হাঁটা চলা করবো সেটার প্র্যাকটিস করছি

নভোহা চিফ তখন প্রশ্ন করলেনচাঁদে গিয়ে লাভ কীসেখানে কী মানুষ আছে?

এই কথা শুনে অভিযাত্রীরা বেশ মজা পেলেন।  

তখন অভিযাত্রীদের একজন বললেনথাকতেও পারে!

তখন চিফ বললেনযদি চাঁদে মানুষ থাকে তাহলে আমার একটা বার্তা চাদের লোকদের কাছে কি পৌঁছে দিতে পারবেন?

নাসার লোকজন শুনে অবাক হলেনআবার  মজা পেলেন। একজন  বললকেন পারবো না। লিখে দিন। চাঁদের মাটিতে কোনো মানুষের সাথে দেখা হলে সেটা সেই মানুষদের কাছে পৌঁছে দেবো

তখন নোভোহা চিফ তার নিজের ভাষায় চাদের মানুষদের জন্য একটা মেসেজ লিখে দিলেন

যখন তারা চিফের ছেলেকে জিজ্ঞেস করলো, এতে কী লেখা আছে?

চিফের ছেলেকে জিজ্ঞেস করল তখন সে বললোএখানে কী লেখা আছে সেট বলা যাবে না

অনেক পীড়াপীড়ি করার পরেও তারা চিফের ছেলের কাছ থেকে জানতে পারলো না সেখানে আসলে কী লেখা আছে

এরপর তারা একজন নোভোহা ইন্ডিয়ানকে পাকড়াও করে তাঁকে জিজ্ঞেস করলো সেই কাগজে কী লেখা আছে?

সে লেখাটা পড়ে বললবলা যাবে না!

নাসার নভোচারীদের কৌতূহল এবার বেড়ে গেলে

তারা যে নভোহা ইন্ডিয়ানকে পাকড়াও করে লেখার মানে জিজ্ঞেস সেই বলে যে বলা যাবে না

তখন নাসার নভোচারীরা একজন নভোহা রেড ইন্ডিয়ানকে পাকড়াও করে তাকে একগাদা টাকা দিয়ে বললএখানে কী মেসেজ দেওয়া আছে সেটা আমাদের পড়ে শোনাও। আমরা চাঁদের মানুষদের সেটা শোনাবো

নভোহা ইন্ডিয়ান সেই লোকটা আমতা আমতা করে বললোএখানে লেখা আছেএই সব সাদা মানুষদের বিশ্বাস করো নাএরা তোমাদের দেশে এসে তোমাদের দেশটা দখল করে নেবে

 লেখক: কলামিস্ট  

         

 


ক্যাটেগরিঃ বিশ্বজুড়ে,


বৈশাখে ইলিশ নয়

বৈশাখে ইলিশ নয়

উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আ.. বিস্তারিত

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি

বাতিলযোগ্য সাইবার নিরাপত্তা আই.. বিস্তারিত

সাকিব: বিতর্ক যার সঙ্গী

সাকিব: বিতর্ক যার সঙ্গী

বাংলাদেশ তখনো বিশ্ব ক্রিকেট অঙ.. বিস্তারিত