English
ঢাকা, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রকাশঃ ২০২৪-১১-২৭ ০২:৫৭:২৮
আপডেটঃ ২০২৪-১২-০৪ ০৩:১০:১২


বিরোধী দলের উচিত ছায়া মন্ত্রিসভা গঠনে উদ্যোগী হওয়া

বিরোধী দলের উচিত ছায়া মন্ত্রিসভা গঠনে উদ্যোগী হওয়া

সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জীবন কাজ নিয়ে প্রবাসী লেখক মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনতারেক রহমান: পলিটিক্স অ্যান্ড পলিসিস কনটেম্পরারি বাংলাদেশনামে একটি বই লিখেছেন নিউ ইয়র্ক থেকে ৫৭১ পৃষ্ঠার এই বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা উডব্রিজ ২৬ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকায় বনানীর লেক শোর হোটেলে বইটির  প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সাবেক স্পিকার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের ব্যবস্থাপনায় আইনবিদ ফারজানা শারমিন পুতুলের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যায়যায়দিনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক টিভি শো লাল গোলাপ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক শফিক রেহমান, চারুকলা ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক চিত্রশিল্পী অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, সুপ্রিম  কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, গবেষক মোবাশ্বর হোসেন শরীফুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা কর্মী এবং সমাজের নানা পেশার মানুষের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক শফিক রেহমানের বক্তব্য ব্যাপকভাবে আলোচিত হয় তিনি বিএনপির প্রতি ছায়া মন্ত্রিসভা গঠনের আহ্বান জানান সাংবাদিক শফিক রেহমানের বক্তব্যটি সময় উপযোগী প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় এখানে তার পুরো বক্তব্য তুলে ধরা হলো




উপস্থিত সুধীমন্ডলী,

এখানে যদি অনেক গোলাপ থাকতো তবে আমি সবাইকে একটি করে দিয়ে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানাতাম যাই হোক, অনেক ফুলের মাঝে আমি একটি লাল গোলাপ খুঁজে পেয়েছি সবাইকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা

তারেক রহমান: পলিটিকস অ্যান্ড পলিসিজ - কনটেমপরারি বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইংরেজি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আমাকে নিমন্ত্রিত করায় এবং কিছু বলার সুযোগ দেয়ার জন্য আমি আয়োজকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি বইটির লেখক মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন বর্তমানে নিউ ইয়র্ক নিবাসী তার সঙ্গে আমার আগে পরিচয় হয়নি এখানে তার কথা আমি শুনলাম আরো উপস্থিত আছেন বিএনপির অনেক ত্যাগী নেতা, কর্মী সমর্থকবৃন্দ এদের সবাইকে আমি সশ্রদ্ধ অভিনন্দন জানাচ্ছি কারণ এরা সবাই খুবই প্রতিকূল অবস্থা সত্ত্বেও অবিচল থেকেছেন সত্য, ন্যায় সুবিচার দাবি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার প্রতিষ্ঠার পথে

 



মিথ্যা মামলায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকার শফিক রেহমানকে কারারুদ্ধ করে


আমি নিজেও মিথ্যা মামলা এবং নির্জন কারাবাসের শিকার হয়ে আমার বাম চোখ এবং বাম কানে  শোনার শক্তি হারিয়েছি আমি সত্যিই এখন একচোখা! একদিকেই দেখছি বিএনপিকেই শুধু দেখছি! ৪০ বছর আগে আমারই প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা যায়যায়দিন কেড়ে নেয়া হয়েছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বিশেষ চাপ প্রয়োগে এর আগে পত্রিকাটি এরশাদ আমলে নিষিদ্ধ হয়েছিল দুইবার এবং আমাকে নির্বাসনে থাকতে হয়েছিল প্রায় ছয় বছর হাসিনার স্বৈরশাসনে গত আট বছর আমাকে নির্বাসিত থাকতে হয়েছে বিদেশে এখানেই চলে আসে মি. তারেক রহমানের নাম তাকেও বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল তিনি এখনো বিদেশে আছেন আমরা সবাই আন্তরিক ভাবে আশা করছি, তারেক রহমান অচিরেই দেশে ফিরে আসবেন এবং তার পার্টির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন দেশে উপস্থিত থেকে এখন তিনি সেটা করছেন লন্ডন থেকে ভিডিও সম্প্রচারের মাধ্যমে

এখানে আমাকে বলতেই হবে, আমি সবচেয়ে খুশি হয়েছি, ম্যাডাম খালেদা জিয়া যে দেখতে পারলেন, তিনি সঠিক পথে চিরজীবন থাকায় দেশবাসী তার রাজনৈতিক অবদানের যথার্থ মূল্যায়ন করেছেন তার প্রতিপক্ষ দুর্বিনীত, অশালীন, অমার্জিত, অসভ্য, অত্যাচারী স্বৈরশাসককে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে কিছু পত্রিকা এবং কিছু ব্যক্তি এখনো এইপালিয়ে যাওয়াকথাটি ব্যবহার করতে চান না তারা বলেন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন এতো লজ্জা কেন সত্য কথা বলতে?

আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই এই স্বৈরশাসক বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী . মুহাম্মদ ইউনূসকে পদ্মা নদীতে দুইবার চুবিয়ে ওঠাতে হবে, তবে দেখতে হবে . ইউনূস যেন মারা না যান এর পরেই সেই স্বৈরিনী বলেছিলেন, খালেদা জিয়াকে পদ্মায় টুশ করে ফেলে দিতে তাকে আবার তুলে নেয়ার কথা তিনি বলেননি অর্থাৎ ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে তিনি তখনই সরাসরি হত্যার উসকানি দিয়েছিলেন সকলের সামনে আপনারা ভেবে দেখুন, কতোখানি নির্মম, নিষ্ঠুর নির্লজ্জ খুনি হলে এমন কথা সবার সামনে তিনি বুক ফুলিয়ে বলতে পারেন চিতল মাছ খেয়ে তার বুক অনেক বড় হয়ে গিয়েছে, আমি লক্ষ করেছি তিনি তারেক রহমানকে পদ্মায় ডোবানোর কথা বলতে পারেননি কারণ অজ্ঞ মূর্খ শেখ পরিবারের সন্তান এই মহিলাটি অন্তত এটুকু জানেন যে, তারেক রহমান থাকেন লন্ডনে টেমস নদীর তীরে ওই স্বৈরিনীকে আমি মিলিয়ন মিলিয়ন, বিলিয়ন বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ধিক্কার জানাই আপনারাও জানাবেন

ওয়ান ইলেভেনে জেনারেল মইন ইউ আহমেদ বৃগেডিয়ার ফজলুল বারির ক্যু- পরে প্রথমেই তারেক রহমানকে জেলবন্দি করে নিষ্ঠুর অত্যাচার করা হয় তাকে চোখ বাধা অবস্থায় সিলিং থেকে মেঝেতে ফেলে দেয়া হয় এর ফলে তারেক রহমানের কোমর ভেঙে যায় আপনারা কেউ কেউ সেই ছবি দেখেছেন পরবর্তীতে আমি তাকে বুঝিয়ে বলেছিলাম, তার প্রতি এই দুঃসহ অত্যাচারের কথা সাধারণ মানুষকে জানিয়ে দিলে ভবিষ্যতে অফিসাররা সাবধান থাকবে এবং হয়তো রকম  অত্যাচার আর করবে না তাকে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলের তিন নাম্বার মেডিকাল ওয়ার্ডের তিন নাম্বার বেডে চিকিৎসার জন্য কিছুকাল রাখা হয় সেই চিকিৎসায় কোনো উন্নতি না হওয়ায় কিছু বন্ধু দেশের চাপে অফিসাররা বাধ্য হয় তারেক রহমানকে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য যেতে দিতে তবে যাবার আগে জোর করে তার কাছে বানোয়াট স্বীকারোক্তিতে তার সই নেয়া হয় আমারও এমন বানোয়াট স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে আপনারা সেটা খেয়াল রাখবেন ক্রমে তারেক রহমান সুস্থ হয়ে ওঠেন তার উপরে যে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত বলতে চাননি আমাকে তিনি বিব্রত বোধ করছিলেন হয়তো তিনি পলাতক স্বৈরিনীর মতো দুঃখ-ব্যথাকে রাজনৈতিক ব্যবসায়ে রূপান্তরিত করতে চাননি হ্যা, আমি নিজেও যখন কাশিমপুরে সেই নির্জন কারাবাস থেকে সেন্ট্রাল জেলে ট্রান্সফার হই, তখন  ওই তিন নাম্বার ওয়ার্ডের তিন নাম্বার বেডে আমাকে শুতে দেয়া হয়েছিল আমার আগে কাউকে ওই বেডে শুতে দেয়া হয়নি তারেক রহমান জেনে খুশি হবেন যে, বিভিন্ন বাহিনীতে তখনো এবং এখনো বহু অফিসার আছেন যারা তাকে সম্মান করেন সেজন্য তারা ওই বেডে আর কাউকে শুতে দেননি আমি সৌভাগ্যবান তারা আমাকে সেখানে শুতে দিয়েছিলেন

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখছি, এই সেদিন সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত হলো তখন . মুহাম্মদ ইউনূসের পাশে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে সামরিক বাহিনীর ব্যান্ডপ্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশগানটির সুর বাজায় এই তরুণ সেনারা সবাই জানেন, ওয়ান-ইলেভেন ক্যুর সময়ে ম্যাডাম খালেদা জিয়া দেশ ছেড়ে যাননি তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশই তার একমাত্র ঠিকানা বিএনপির দলীয় সঙ্গীতের সুর বাজানো হয়েছিল দলীয় কারণে কিন্তু নয়, দেশের প্রতি ম্যাডাম খালেদা জিয়ার ভালোবাসার কারণে ইতিহাস তাই বলবে, ম্যাডাম খালেদা জিয়া অসাধারণ, অতুলনীয় অসামান্য এক নেত্রী পক্ষান্তরে, স্বৈরিনী মহিলাটি দেশ থেকে পালাবেন না বলা সত্ত্বেও অন্তত চারবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন তার পিতাও সবাইকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে বলে ১৯৭১ সালে চলে গিয়েছিলেন তফাৎ এই যে, পিতা চলে গিয়েছিলেন পাকিস্তানে, কন্যা পালিয়েছেন ভারতে

খারাপ গুণ যেমন বংশানুক্রমে প্রবাহিত হতে পারে আপনার ধমনীতে, ভালো গুণও তেমন পরিবারে চলমান থাকতে পারে পরিবারের ধমনীতে

মদ্যপ অবস্থায় একটি দুর্ঘটনায়  গুলশানে আবদুল আউয়াল মিন্টুর বাড়ির সামনে পতিত হবার পরে কুকুরপ্রেমী এক তরুণকে ম্যাডাম খালেদা জিয়া মামলা থেকে বাচিয়ে আমেরিকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি এটা করেছিলেন নব্বইয়ের দশকে ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় তিনি বিবেচনা করেছিলেন ওই উচ্ছৃংখল যুবকটি বিরোধী নেত্রীর একমাত্র পুত্র সন্তান এর আগে প্রেসিডেন্ট জিয়াও দেখিয়েছিলেন ক্ষমাপরায়তা তিনি শেখ মুজিবের কন্যাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছিলেন এই পরিবারের এসব মহানুভবতা ক্ষমাপরায়নতা বংশসূত্রেই পাওয়া

এখানে তারেক রহমান সম্পর্কে একটি ঘটনার উল্লেখ করছি, যখন আমেরিকায় রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন জানলেন, তারেক রহমান সজীব ওয়াজেদ জয় আমেরিকাতেই আছেন তখন তিনি প্রস্তাব করেছিলেন তারা যেন এক সাথে মিলিত হয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনা করেন সিনেটর ম্যাককেইন বলেছিলেন, তোমরা দুজনাই একসময় বাংলাদেশের নেতা হবে, কেউ আগে কেউ পরে সুতরাং এখনই সময় তোমরা দুজন পরস্পরকে জেনে নাও তারেক রহমান সেই নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন কিন্তু সজীব ওয়াজেদ জয় সেই নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন আরেকটি ঘটনা, সজীব ওয়াজেদ জয় বহুদিন পর স্বদেশে ফিরে এলে তারেক রহমান তাকে ফুল পাঠিয়ে অভিনন্দন জানান জয় সেই ফুল ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাডাম খালেদা জিয়াও ওয়ান ইলেভেনের পর প্রতিপক্ষ নেত্রীর মুক্তি আমেরিকা থেকে ফেরার পর ফুল পাঠিয়েছিলেন সেই ফুলও প্রতিপক্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন 

সৌজন্যবোধ শালীনতা এক দিনে সৃষ্টি হয় না পারিবারিকভাবে কয়েক প্রজন্ম ধরে হয় খালেদা জিয়ার পারিবারিক ঐতিহ্য বিষয়ে এই বইটির প্রথমেই মূল্যবান তথ্য আছে দয়া করে সেসব আপনারা পড়লে বুঝবেন জিয়া পরিবার শেখ পরিবারের কি আকাশ পাতাল তফাৎ পিনাকী ভট্টাচার্যের ভাষায় বলতে হয়, কোথায় মহারানী আর... দ্বিতীয় লাইনটি আর বললাম না আপনারা জানেন তিনি কি বলছেন

তার মানে এই নয় যে, আপনারা পারিবারিক অথবা ব্যক্তি বন্দনা করবেন তারেক রহমানও সম্প্রতি একথা বলেছেন, তিনি তার নামের আগে কোনো বিশেষণ যেমন দেশনায়ক, রাষ্ট্রনায়ক ইত্যাদি ব্যবহার করতে বারণ করেছেন এবং তার জন্মদিন পালন না করতে বলেছেন ধন্যবাদ, থ্যাংক ইউ  তারেক রহমান

নামের আগে বন্দনামূলক বিশেষণ প্রয়োগের ম্যানিয়া থেকে বাংলাদেশকে বেরিয়ে আসতে হবে কিন্তু একটি বিশেষণখুনিশব্দটা ওই স্বৈরিনীর নামের আগে ব্যবহার করতে পারেন, করা উচিতও সারা দেশে দেয়াল লিখনেখুনি হাসিনাকথাটি লেখা আছে এখন এটিই তার প্রকৃত পরিচয়

 


গ্রাফিতিটি মিরপুরের বাংলা কলেজ থেকে তোলা ছবি: এম জেড

 

তারেক রহমান সম্প্রতি আরো দুটি ভালো কথা বলেছেন তিনি বলেছেন কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি রাষ্ট্রের কর্ণধার হতে পারবেন না দ্বিতীয়ত প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার একটি ভারসাম্য থাকতে হবে তারেক রহমান এবং এখানে উপস্থিত অনেকেই দ্রুত নির্বাচন চাইছেন আমিও চাই অনেকেই তাদের কাছে জানতে চাইবে এক. কে হবেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী, আপনাদের হয়তো মনে আছে আওয়ামী লীগ দুবারই ক্ষমতায় এসে শেয়ার বাজারে বিরাট ধ্বস নামিয়েছিল সেটি যেন না হয় দুই. কে হবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কারণ, এদের কাজের ফলেই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস খাবারদাবারের দাম কমবে অথবা বাড়বে

পাশাপাশি একটি প্রশ্ন এখানে আসে, কে হবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কারণ তার কাজের ওপরও নির্ভর করবে কতোখানি বিদেশি সাহায্য আমরা পাবো এবং কতো রফতানি করা সম্ভব হবে

তারেক রহমান বহু বছর যাবৎ লন্ডনে নির্বাসিত থেকে নিশ্চয়ই দেখেছেন, টোরি পার্টি অতি অল্প সময়ের মধ্যে পাঁচবার দলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে বদল করেছে ডেভিড ক্যামেরন, টেরেসা মে, বরিস জনসন, লিজ ট্রাস ঋষি সুনাক প্রধামন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন এছাড়া প্রতিবারই টোরি মন্ত্রিসভার সদস্যদের বদলানো হয়েছে অন্যদিকে লেবার পার্টির নেতৃত্বে রদবদল করা হয়েছে যেমন টনি ব্লেয়ারের বদলে এসেছিলেন গর্ডন ব্রাউন এবং করবিনের বদলে এসেছেন বর্তমানে স্টারমার 

প্রেসিডেন্ট জিয়াও বারবার তার মন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটিয়ে একটা যোগ্য টিম করেছিলেন বর্তমানে . মুহাম্মদ ইউনূস এসব উদাহরণ অনুসরণ করতে পারেন ভবিষ্যতে তারেক রহমানও তাই করবেন এমন আশা অনেকেই করেন ইতিমধ্যে তারেক রহমান দেখতে পারেন লন্ডনে বিরোধী দলে থেকে একটি ছায়া মন্ত্রিসভা কিভাবে কাজ করতে পারে এবং বিশেষজ্ঞ হতে পারে বিশেষজ্ঞ দ্বারা গঠিত মন্ত্রিসভাই একটি দেশ চালাতে পারে সবাই নির্বাচন চাইছেন কিন্তু মন্ত্রিসভা চালাবে কে? লক্ষ করুন ইতিমধ্যে আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সম্ভাব্য মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেছেন যার ফলে সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পরে নয়, আগেই যা সমালোচনা, আলোচনা হবার তা হচ্ছে এই পদ্ধতিতে বাংলাদেশকেও এগোতে হবে

 


ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের সফল গভর্নর মার্ক কার্নি


আমি এখানে একটা ছোট অনুরোধ করতে চাই বৃটেনে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের সফল গভর্নর মার্ক কার্নি- জন্ম হয়েছিল কানাডায় তিনি কানাডার সেন্ট্রাল ব্যাংকের সফল গভর্নর ছিলেন তাকে বৃটিশ নাগরিকত্ব দিয়ে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর করা হয়েছিল কিন্তু সফলভাবে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড পরিচালনা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে মত বিরোধিতার পরে তিনি পদত্যাগ করেন এখন লেবার পার্টি ক্ষমতায় এসে তাকেই আবার তাদের অর্থমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দিয়েছে অর্থাৎ কোনো দলীয় সমর্থক বা কোনো দেশের নাগরিকত্ব ভিত্তিতে নয়- সুযোগ্য টেকনোক্র্যাট হবার ভিত্তিতে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকট অর্থনৈতিক সংকট টাকার মান ধরে রাখতে হলে, বিনিয়োগ বাড়াতে হলে, দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে হলে এই ধরনের অনেক সুযোগ্য টেকনোক্র্যাটদের আমাদের দেশে আনা উচিত ইংল্যান্ড কিভাবে বেকারদের চাকরির সমস্যার সমাধান করছে আশা করি তারেক রহমান সেটাও দেখবেন আজকের যে আন্দোলনের ফলে আমরা সবাই এখানে উপস্থিত হতে পেরেছি তাদের বড় দাবি ছিল, যোগ্যতার ভিত্তিতে যেন সবার চাকরি হয় আশা করি তারেক রহমান বিষয়টি দেখবেন

এই বইটির পনের নাম্বার অধ্যায়ে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ইতিহাস বর্ননা লেখা হয়েছে দ্রুত গতিতে এই মূল্যবান কাজটি করেছেন লেখক তবে এই অধ্যায়ে আরো সংযোজিত হওয়া উচিত হবে বিদেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকার বহু কথা বিশেষত লন্ডনে সুরমা পত্রিকার সম্পাদক শামসুল আলম লিটন, গবেষক আখলাক আহমেদ, প্যারিসে পিনাকী ভট্টাচার্য, ওয়াশিংটনে মুশফিকুল ফজল আনসারী, নিউ ইয়র্কে মিজানুর রহমান ভুইয়া মিল্টন, কনক সারওয়ার, ইলিয়াস হোসেন, সিঙ্গাপুরে মিনার রশীদ এবং অস্ট্রেলিয়াতে ফাহাম আবদুস সালাম গত কয়েক বছর যাবৎ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন সর্বোপরি দেশে বিদেশে সোশাল মিডিয়ার ভূমিকা বিস্তারিতভাবে সংযোজিত করলে এই বইটি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের একটি প্রামাণ্য দলিল হয়ে থাকবে

 

 

বইয়ের প্রচ্ছদ


আমি আরো অনুরোধ করবো, ৪৭১ পৃষ্ঠার বইটির বাংলা অনুবাদ যেন দ্রুত প্রকাশিত হয় তবে আশা করবো দামটি যেন সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে বইটির লেখক প্রকাশককে ধন্যবাদ একটি সময়োচিত, জ্ঞানসমৃদ্ধ বই প্রকাশের জন্য

সবশেষে আমি একটি সুন্দর তথ্য তারেক রহমান সম্পর্কে আপনাদের জানাতে চাই আমি নিজে যেমন খুব ছোটবেলা থেকে হাওয়াইন গিটার কিভাবে হাওয়াইন সুরে বাজাতে হয় সেটা লন্ডনে গিয়ে শিখতে চেয়েছিলাম এবং শিখেও ছিলাম আসলে আমি কিন্তু গানের শিল্পী আমি ক্লাস টেন থেকে পত্রিকা সম্পাদনা করে আসছি আমি  গিটার বাজানোও শিখেছিলাম তেমনি তারেক রহমানও লন্ডনে পিয়ানো বাজনা শিখেছেন এবং এখনও শিখছেন আমি তার বাড়িতে গিয়ে কি-বোর্ড পিয়ানো দেখে অবাক হয়েছিলাম আমি স্টাফ নোটেশনে যে গান হাওয়াইন গিটারে তুলেছি সেই গানের নোটেশনগুলোই পিয়ানোর ওপর রাখা দেখলাম আমি তার স্ত্রী জোবাইদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এই পিয়ানো কে বাজায়? তখন জোবাইদা খুব লজ্জা পেয়ে বললো, তারেকের ছোট বেলা থেকেই গানের খুব ভক্ত সে পিয়ানো শিখতে চেয়েছে আমি তার জন্মদিনে কি-বোর্ড পিয়ানো উপহার দিয়েছি সে এখন তা শিখছে

তারেক রহমানের এই সঙ্গীত অনুরাগের সূত্র ধরেই আমি আপনাদের সবাইকে আমার খুবই পছন্দের একটি গানের কথা বলতে চাই যেটি এখন দেয়ালে দেয়ালে লেখা আছে  শিল্পী মান্না দে- চাচা কেসি দে যিনি ১৩ বছর বয়সে  ভুল চিকিৎসায় অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি গানটি লিখেছিলেনমুক্তির মন্দির সোপানতলে, কতো প্রাণ হলো বলিদান, লেখা আছে অশ্রুজলেএই গানটির অন্য কয়েকটি লাইন আমার অতি প্রিয় লাইনগুলো হচ্ছেযারা স্বর্গগত তারা এখনো জানে, স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভূমি, তারা কি ফিরিবে আর?’ না তারা আজ এখানে উপস্থিত নেই আপনারা আছেন কোনোদিনও তারা আর থাকতে পারবেন না কিন্তু আমরা পারি তাদের মহান স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, আরো আমরা পারি জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে যারা আহত হয়ে আছেন তাদের দ্রুত সুস্থ হবার কামনা করতে আসুন আমরা সবাই তা করি

ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষণ শোনার জন্য

 

 

-বিপরীত স্রোত ডেস্ক

 



ক্যাটেগরিঃ রাজনীতি,
সাবক্যাটেগরিঃ দেশ,


আরো পড়ুন