মুস্তাকিম আহমেদ
কেমন যেন উদ্ভ্রান্ত। চোখ দুটো ঈষৎ লাল। চেহারায় স্বাভাবিক জেল্লা নেই।
পরপর বেশ কিছুদিন তাকে এভাবে দেখলাম।
তিনি আমার সহকর্মী।
টিফিনের বিরতিতে একদিন আমরা কয়েকজন তাকে চেপে ধরলাম।
“বলুন তো ভাই! ব্যাপারখানা কী?”
“এই বিরান ভূমিতে কেউ কি তবে এলেন!”
ভদ্রলোকের জন্য পাত্রী খোঁজা চলছে!
আমাদের সম্মিলিত রসিকতায় তিনি লজ্জা পেলেন।
“কী বলবো, নেটফ্লিক্সের সিরিজগুলো এমন বজ্জাত!শুরু করলে ছাড়া যায় না। নেশা হয়ে যায়।”
কোন সিরিজের জন্য তিনি রাতের ঘুম হারাম করছেন জানতে খুব লোভ হলো!
“নারকোস।”
পরের কয়েকদিন নেটফ্লিক্স নিয়ে খোঁজ খবর নিতে গিয়ে অবাক হলাম। বাংলাদেশে নেটফ্লিক্স বেশ সহজলভ্য। একটা অ্যাকাউন্ট ৪ জন পর্যন্ত ব্যাবহার করতে পারে। খরচ মাত্র ২০০-২৫০ টাকা!
“বলতো দেখি নেটফ্লিক্স কীভাবে আয় করে?” একদিন ক্লাসে প্রশ্ন করলাম।
মৃদু গুঞ্জন শুরু হলো।
“সিনেমা নির্মাতারা নেটফ্লিক্সে তাদের সিনেমা রিলিজ করেন। (করোনা কালে প্রায় সবাই বাধ্য হয়ে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বেছে নিচ্ছেন।)
সিনেমাগুলো নেটফ্লিক্স কিনে নেয়।তারা নিজেরাও সিনেমা বানায়। ওয়েব সিরিজগুলো তাদের নিজস্ব প্রযোজনা।নেটফ্লিক্সে কোনো বিজ্ঞাপন বিরতি নেই।অর্থাৎ সিনেমা বা সিরিজ চলাকালে কোনো কোম্পানির বিজ্ঞাপন আসবে না।
তাহলে তারা আয় করে কীভাবে?”
ছাত্র ছাত্রীদের কেউ উত্তর দিতে পারলো না।
“গ্রাহকরা প্রতিমাসে যে সাবস্ক্রিপসন ফি দিচ্ছেন সেটাই তাদের আয়।”
আচ্ছা বলতো! নেটফ্লিক্সের সারা পৃথিবীতে মোট গ্রাহক সংখ্যা কত?”
“৫ লক্ষ, ১৫ লক্ষ, ৫০ লক্ষ...............৩ কোটি!”
সংখ্যাটা নিয়ে একটু রহস্য থাকুক!
গুয়ান্তেনামো বে।
মনুষ্য ইতিহাসের একটা কলঙ্কিত অধ্যায়।আটক কয়েদীরা যেখানে দিনের পর দিন আমেরিকান প্রশাসনের অসুস্থ মানসিকতার স্বীকার হচ্ছেন । এই কয়েদীদের একটা বড় অংশকে আটক করা হয়েছে স্রেফ সন্দেহের বশে।
গুয়ান্তেনামো বে তে যেসব উপায়ে মানুষ, মানুষকে নির্যাতন করে শুনলে শিউরে উঠতে হয়।
তথ্য আদায় করার জন্য তাদের এরকম একটি অমানবিক কৌশল- ঘুমাতে না দেয়া।
আবু যুবেয়দাহ হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, যার উপর নির্যাতন চালানোর জন্য সিআইএ কে তৎকালীন বুশ প্রশাসন প্রথমবারের মত অনুমতি দেয়।
নানাবিধ অকথ্য নির্যাতনের একটা ছিল আবু যুবেয়দাহকে ঘুমাতে না দেয়া। তাকে দুই থেকে তিন সপ্তাহ কিংবা তার থেকেও বেশীদিন ঘুমাতে দেয়া হয় নি।
না ঘুমিয়ে থাকা, দীর্ঘমেয়াদী অপর্যাপ্ত ঘুম মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
আবু যুবেয়দাহ’র সত্যি দুর্ভাগ্য। চার বছর পরে হলেও সিআইএ বুঝতে পেরেছিল আল কায়দা লেফটেন্যান্ট হিসেবে তাকে ভুল করে আটক করা হয়েছে।
“অ্যামাজন, ইউটিউব,
এইচবিও-নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কে?”
নেটফ্লিক্সের সিইও রিড হ্যাসটিংস এই প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন নেটফ্লিক্সের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী –মানুষের “ঘুম”।
নেটফ্লিক্সের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে এই মন্তব্যের পরপর টুইট করা হয়, “ঘুম আমার সবচেয়ে বড় শত্রু।”
নেটফ্লিক্স তার সবচেয়ে বড় শত্রুকে বশ করে ফেলেছে কি?
স্ক্রিনের সামনে বসে কোনো অনুষ্ঠানের একের পর এক পর্ব দেখাকে নাম দেয়া হয়েছে বিঞ্জ ওয়াচিং।
পশ্চিমা বিশ্বে মানুষের শরীরে বিঞ্জ ওয়াচিং-এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু হয়ে গেছে। শরীর চর্চা, পারষ্পরিক যোগাযোগ, ঘুম বাদ দিয়ে মানুষ আজকাল এই নেশার দিকে ঝুঁকছে।
মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন, অস্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন, অস্বাভাবিক আচরণের সাথে বিঞ্জ ওয়াচিং এর যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন।
শেষ করবো নেটফ্লিক্সের মোট গ্রাহক সংখ্যা কত জানিয়ে!
২০১৯ সালে নেটফ্লিক্স মোট আয় করেছে ২০.১৬ বিলিয়ন ডলার আর ২০২০ এর প্রথম ৩ মাসেই তাদের আয় ৫.৭৭ বিলিয়ন ডলার।
পৃথিবী জুড়ে থাকা নেটফ্লিক্সের গ্রাহক সংখ্যা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশী!
নেটফ্লিক্সের মোট গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ১৯.৩ কোটি!
শিক্ষক ও সমাজকর্মী
ড. বিজন কুমার শীল বিস্তারিত
বিপরীত স্রোত প্রতিবেদন বিস্তারিত
ডা. আহমদ মরতুজা চৌধুরী বিস্তারিত
যারিন মালিয়াত অদ্রিতা বিস্তারিত
মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান বিস্তারিত
উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আ.. বিস্তারিত
বাতিলযোগ্য সাইবার নিরাপত্তা আই.. বিস্তারিত
বাংলাদেশ তখনো বিশ্ব ক্রিকেট অঙ.. বিস্তারিত
ব্রেদিং আউট বার্ডেন নামে কর্ম.. বিস্তারিত