মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলা অবস্থায় ১৯৪০ সালে জার্মানির শাসক অ্যাডলফ হিটলারকে বিদ্রুপ করে আমেরিকায় বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব চার্লি চ্যাপলিন ‘দি গ্রেট ডিক্টেটর’ নামে একটি সিনেমা তৈরি করেন।
পুরো বিশ্বকে পদানত করে একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে বিভোর সেনাশাসক হিংকেল (হিটলারের প্রতীকী নাম) একটি গ্লোব নিয়ে খেলায় মেতে ওঠেন। এই দৃশ্যটি ব্যাপক ভাবে আলোচিত এবং স্বৈরশাসকদের মনোভাবের প্রতীকে পরিণত হয়।
প্রায় আট দশক পর এক বৃটিশ কার্টুনিস্ট সেই গ্লোব নিয়ে খেলারত আরেকজনের ছবি আঁকলেন। যিনি হিটলাররূপী হিংকেলের মতোই পৃথিবীতে রাজত্ব বিস্তারের স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন। তিনি হলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসাবে তালিকায় এক নাম্বারে চলে আসা জেফ বেজোস। যিনি অ্যামাজনের সিইও হিসাবে বেশি পরিচিত। ৫৫ বছর বয়সী বেজোস ১৩৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তার কোম্পানি অ্যামাজনের সম্পদের পরিমাণ এক ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। অ্যামাজনের শতকরা ১৬ ভাগের মালিক বেজোস।
৫ জুলাই ১৯৯৪ সালে সিয়াটলের এক গ্যারাজে প্রতিষ্ঠিত হয় অ্যামাজন ডট কম। বই বিক্রির একটি ই-কমার্স সাইট হিসাবে অ্যামাজন যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তাদের লোগোতে চিহ্নিত তীরের মতো এ টু জেড বা সব ব্যবসায় তারা ঢুকে পড়েছে। এ কারণে এই টেক জায়ান্টকে সাম্প্রতিক বিশ্বের বাজার অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণকারী গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। আলপিন থেকে রকেট সবই এখন জেফ বেজোসের নিয়ন্ত্রণাধীন। মহাকাশযান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিনের মালিক বেজোস।
অ্যামাজন ও বেজোসের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বাইরেও অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে তাদের বিনিয়োগ আছে। অ্যামাজন ডট কমের পাশাপাশি এর সাবসিডিয়ারি বৃটিশ ভার্সন অ্যামাজন ডট কো ডট ইউকে-সহ অ্যাপস্টোর নিয়ন্ত্রণ করে অ্যামাজন। সারা পৃথিবীতে ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা নির্ধারণ করে যে অ্যালেক্সা ডট কম সেটাও অ্যামাজনের নিয়ন্ত্রণে। অ্যালেক্সার রেটিংয়ের ওপর অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেয়ার বিষয়টি অনেকটা নির্ভর করে। রোবোটিকস কোম্পানি কিভা সিস্টেমস, খাবারের মার্কেট দখল করতে আসা হোল ফুড বেজোসের নিয়ন্ত্রণাধীন। গুগল, জ্যাপোস, গুডরিডার, অ্যাবে বুক, লুকআউট, ডোমো, টুইটার, বিজনেস ইনসাইডারসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে রেখেছেন জেফ বেজোস।
অ্যামাজন দাবি করে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে যে কোনো প্রোডাক্ট তারা গ্রাহকের কাছে পাঠাতে সক্ষম। ড্রোন দিয়ে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছানো, কাজের ক্ষেত্রে পনের হাজার রোবট ব্যবহার করা, প্রায় দুই লাখ ত্রিশ হাজার আটশ কর্মীর সহযোগিতায় প্রতি সেকেন্ডে ৩৫টি পণ্য ডেলিভারি, দেড় মিলিয়ন আইটেম প্রতিদিন সরবরাহ করাসহ অ্যামাজন সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য অনেককেই চমকিত করবে।
কিন্তু মুশকিল হচ্ছে অ্যামাজনের একচেটিয়া ব্যবসার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আরো অনেক ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরা। ধরা যাক, কেউ গোল আলু অ্যামাজনে অর্ডার দিয়ে কিনে নিলেন। এতে করে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পাড়ার দোকানের গোল আলু বিক্রেতাগণ। যারা হয়তো আলু বিক্রি করেই আয় করেন। এই ঘটনা এখন সারা পৃথিবীতেই ঘটছে। ছোট ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন অল্প কয়েকটি বড় কোম্পানির কাছে। তবে এসব বিষয় নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন জেফ বেজোসের মতো ব্যক্তিগণ। তারা তাদের মার্কেট দখলের প্রতিযোগিতায় একের পর এক কৌশল প্রয়োগ করে চলেছেন।
অ্যামাজন বস জেফ বেজোস
টেক ওয়ার্ল্ডের আয়রন ম্যান হিসাবে জেফ বেজোস বরাবরই পরিচিত। তিনি তার বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বছরে মাত্র একবার অল্প সময়ের জন্য বসেন। যে কোনো মিটিংয়ে তিনি বেশি মানুষের সঙ্গে কথা বলা পছন্দ করেন না। তার টু পিৎসা রুল বেশ আলোচিত। তিনি মনে করেন কোনো মিটিংয়ে সর্বোচ্চ এমন সংখ্যক অংশগ্রহণকারী থাকাই যথেষ্ট যাদের দুটো পিৎসা (পিজা) দিয়ে আপ্যায়ন করা সম্ভব। গত ২৫ বছরে জেফ বেজোস তার পারিবারিক ইমেজ গড়ে তুলেছিলেন সতর্কতার সঙ্গে। চার সন্তান ও লেখক স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি বেজোসকে নিয়ে তার সংসার। পরিবারকে সময় দিতে কখনো সকালে বিজনেস অ্যাপয়েন্টমেন্ট রাখেন না জেফ বেজোস। রাতে ডিনারের পর থালাবাসন নিজ হাতে ধুয়ে রাখেন। কিন্তু সম্প্রতি বিশে^র সবচেয়ে ধনী ঘোষিত হওয়ার পর তার সংসারে সে শান্তি থাকে নি। ৯ জানুয়ারি ২০১৯ তাদের ২৫ বছরের সংসার জীবনের অবসানের ঘোষণা টুইটারে জানান জেফ বেজোস। বিশে^র সবচেয়ে ব্যয়বহুল ডিভোর্সের ঘটনা হয় এটি। অভিযোগ আছে যে, জেফ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন।
ন্যায় অন্যায় জানিনে
শুধু লাভ করতে জানি
অ্যামাজনের বিরুদ্ধে ব্যাপক ভাবে ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ এনেও আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুই করতে পারেন নি। বরং মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে জেফ বেজোসের বিরুদ্ধে গিয়ে ট্রাম্প বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন না, তিনি হেরে যাবেন। অ্যামাজনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক মন্তব্যে ট্রাম্প স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারকে ট্যাক্স না দেয়ার অভিযোগের পাশাপাশি আমেরিকান ডাকবিভাগকে তাদের পণ্য পরিবহণের সহজ মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন অ্যামাজন আমেরিকান ডাক ব্যবস্থাকে তাদের ডেলিভারি বয়-এ পরিণত করেছে। অ্যামাজনের কারণে অসংখ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পথে বসে যাওয়ার অভিযোগ তোলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পরে অবশ্য ট্রাম্প যথারীতি তার অ্যামাজন বিরোধী প্রচারণা থেকে সরে আসেন।
শিগগিরই হয়তো বাংলাদেশে অ্যামাজনের কার্যক্রম শুরু হবে। ২০১৭ থেকেই এদেশে তাদের ব্যবসা শুরুর উদ্যোগ দেখা যায়। বাংলাদেশেও ডাক বিভাগকে ব্যবহার করে ব্যবসা করার পরিকল্পনা করছে অ্যামাজন।
প্রথম অবস্থায় ডাক বিভাগের সঙ্গে একটি পাইলট প্রজেক্টের আওতায় অ্যামাজন কাজ শুরু করবে। তা সফল হলে অ্যামাজনের সঙ্গে চুক্তি করবে সরকারÑ এমন তথ্য দিয়েছিলেন সে সময় ডাক বিভাগের পরিচালক সুশান্ত কুমার মন্ডল। বিষয়টি নিয়ে ২০১৭-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অনলাইন পোর্টাল প্রিয় ডট কম আরো জানায়, সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ডাক বিভাগে বাস্তবায়িত ই-কমার্সের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে (সে সময়ের) ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছন, অ্যামাজন ও আলিবাবার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশের ডাক বিভাগ।
তিনি বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে চাই। এর ফলে ডাক বিভাগের সম্প্রসারণ হবে এবং একই সঙ্গে তাদের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। ...বাংলাদেশে অ্যামাজন ও আলিবাবার আগমনকে এ দেশের ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ীরা কোন দৃষ্টিতে দেখছেন? উত্তরে দেশের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের একটি আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাসরুর বলেন, অ্যামাজন বা আলিবাবার মতো কোম্পানিগুলোকে যদি আমরা আমাদের ই-কমার্স মার্কেটে রাজত্ব করতে দিই, তাহলে হয়তো অনেক কাস্টমারই খুশি হবেন, কিন্তু ই-কমার্স (বা এফ-কমার্স) শিল্পে নতুন আসা হাজার হাজার তরুণ উদ্যোক্তার ব্যবসা নিশ্চিত ভাবেই নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়বে। এই তরুণ উদ্যোক্তাদের কোমর শক্ত করে দাঁড়া হওয়ার আগেই এই জায়ান্টদের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত কতটুকু সুবিবেচনাপ্রসূত তা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতেই পারে। অ্যামাজন বা আলিবাবা এখনো বাংলাদেশে রেজিস্টার্ড হয় নি। তাহলে কীভাবে তারা বাংলাদেশি কাস্টমারের কাছ থেকে বৈধভাবে টাকা নিতে পারবে? বাংলাদেশের ফরেন এক্সচেঞ্জ আইন বিদেশে টাকা পাঠানোর ব্যাপারে অনেক স্ট্রিক্ট। কোনো ভাবেই ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়া কোনো বিদেশি কোম্পানির টাকা পাঠানোর সুযোগ নেই। কেউ যদি ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অ্যামাজন বা আলিবাবাকে পেমেন্ট করে, তারপরেও দেশে কোনো পণ্য আনার জন্য কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স দরকার পড়ে। এক্ষেত্রে ডাক বিভাগ কীভাবে সেই কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স করবে? একেক পণ্যের ইম্পোর্ট ডিউটি একেক রেট। এই ডিউটি কে দেবে, কীভাবে দেবে? আমার জানা মতে এখনো অনেকেই দেশ থেকে আলি এক্সপ্রেসে অর্ডার দেয় ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড বা পেপ্যাল ব্যবহার করে। পোস্ট অফিস তা ডেলিভারিও দেয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনো ইম্পোর্ট ডিউটি চার্জ করে না। ব্যাপারটা পুরোটাই ট্যাক্স ফাঁকি!
২০১২ সালে ভারতে অ্যামাজন আসার পর থেকেই নানা বিতর্ক শুরু হয়। ভারতের পতাকার চক্র তেরেঙ্গা-র ছবি দিয়ে পাপোষ বানানো, চপ্পলে মহাত্মা গান্ধীর ছবি ব্যবহার নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে অ্যামাজন। জি নিউজ জানায়, গোটা দেশ এক সুরে বলতে শুরু করেছে,ব্যান অ্যামাজন। নিষিদ্ধ করা হোক অনলাইন বিপণন সংস্থা অ্যামজনকে। সময় যত এগোচ্ছে প্রতিবাদের সুর আরও জোরাল হচ্ছে ...ভারতের জাতীয় পতাকা, তেরঙ্গা-র আদলে পা মোছার পাপোষ! অ্যামাজনে তেরঙ্গা পাপোষ বিক্রির প্রতিবাদে কাল থেকেই সরব গোটা দেশ। রাত পোহাতেই সামনে এল আরও এক বিস্ফোরক বিজ্ঞাপন, যা দেখে রাগে ফুঁসছে প্রত্যেক ভারতীয়। তেরঙ্গা জুতা বিকোচ্ছে অ্যামাজনে। এখানেই শেষ নয়, কুকুরের পোশাকে রয়েছে অশোক স্তম্ভ। অ্যামাজনের এই ধরনের বিপণনের প্রতিবাদে আরও একবার সরব হয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। টুইটে নিন্দা করে সুষমা স্বরাজ জানিয়েছেন, অ্যামজনকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ভারতের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করে এমন সব প্রোডাক্ট এখনই প্রত্যাহার করতে হবে। হুমকির সুরে বিদেশমন্ত্রী এও জানান, শীঘ্রই অ্যামাজন থেকে ঐ সমস্ত প্রোডাক্ট সরিয়ে না নেওয়া হলে অ্যামাজনের কেনো আধিকারিককেই ভিসা দেবে না ভারত সরকার।
এই খবরটি প্রকাশের কিছুদিনের মধ্যেই জি নিউজ তাদের অনলাইনে আরেকটি খবর প্রকাশ করে, কয়েকদিন আগেই লজ্জাজনক কাজ করে অনলাইন শপিং সাইট অ্যামাজন। জাতীয় পতাকার ছবি দেওয়া পাপোষ বিক্রি করে। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে অ্যামাজনের উদ্দেশ্যে নিন্দার ঝড় ওঠে। এরপর ফের আবার লজ্জাজনক কাজ করল অ্যামাজন। জাতীয় পতাকার ছবি দেওয়া পাপোষ বিক্রির পর এবার জাতীর জনক মহাত্মা গান্ধীর ছবি দেওয়া চপ্পল! একের পর এক লজ্জাজনক কাজ। অ্যামাজনে সেই চটি বিক্রি হচ্ছে ১৬.৯৯ ডলারে। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১২০০ টাকার মতো।
২০১৮ সালে ভারতে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি রুপি ব্যবসা করা অ্যামাজন অর্থ উপার্জনে নীতি নৈতিকতা বা স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ দেখানোর প্রয়োজন মনে করে নি।
বাকিতে জীবন ফাঁকি
অ্যামাজনের দানবীয় বিস্তারে স্থানীয় ব্যবসা গুটিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তারা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিতে গ্রাহকদের অভ্যস্ত করাতে চাইছে। এর অন্যতম হলো ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যাশের চেয়ে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে মানুষ বেশি খরচ করে। এর প্রধান কারণ ক্রেডিট কার্ডে অর্থের পরিমাণটি নগদের মতো অনুভব করা যায় না। ভারত, বাংলাদেশের দেশগুলোতে বিশাল মার্কেট তৈরির সম্ভাবনা দেখছে অ্যামাজনের মতো কোম্পানিগুলো। তবে তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ এই দেশেগুলোর মানুষকে ক্রেডিট কার্ডে অভ্যস্ত করে তোলা। কেননা এখনো অনেকেই ক্রেডিট কার্ডের চেয়ে ক্যাশে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন। বাংলাদেশের স্থানীয় ই-কমার্স সাইটগুলো ক্যাশ ইন হ্যান্ডেই বেশি দ্রব্য আদান প্রদান করে। অর্থাৎ ডেলিভারির সময় নগদ টাকা গ্রহণ করে।
শুধু ঋণগ্রস্ত জীবন সৃষ্টিই নয়, অ্যামাজনের মতো কোম্পানিগুলো মানুষকে সামাজিক ভাবে একা করে তুলছে। একজন ক্রেতা যখন বাজারে যান তখন আরো অনেকের সঙ্গে তার দেখা হয়। দরদাম করে কেনাকাটা করতে গিয়ে মানুষের সঙ্গে ভাব বিনিময় হয়। অনলাইনের মার্কেটগুলোতে মানবিক ব্যাপারগুলো থাকছে না। তারাই বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতার মধ্যে চাহিদা তৈরি করছে, তারাই আবার সেটা ক্রেতার কাছে বিক্রি করছে। একই সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডের কিস্তি তৈরি করে বহু বছরের জন্য তাদের সিস্টেমের জালে ক্রেতাক আটকে ফেলছে।
এক সময় মহাজনরা অভাবীদের চড়া সুদে ঋণ দিয়ে এক পর্যায়ে তাদের সব কেড়ে নিতো। এখনকার মহাজনরা পণ্যদাস সৃষ্টি করে সেই একই কাজ করছে আরো আধুনিক এবং প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে।
সম্পাদক, বিপরীত স্রোত। সাংবাদিক ও গবেষক। অ্যাসোসিয়েট ফেলো, রয়াল হিস্টোরিকাল সোসাইটি।
ড. বিজন কুমার শীল বিস্তারিত
বিপরীত স্রোত প্রতিবেদন বিস্তারিত
ডা. আহমদ মরতুজা চৌধুরী বিস্তারিত
যারিন মালিয়াত অদ্রিতা বিস্তারিত
মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান বিস্তারিত
সাংবাদিক শফিক রেহমানের পুরো বক.. বিস্তারিত
উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আ.. বিস্তারিত
বাতিলযোগ্য সাইবার নিরাপত্তা আই.. বিস্তারিত
বাংলাদেশ তখনো বিশ্ব ক্রিকেট অঙ.. বিস্তারিত